২৪ অক্টোবর ২০২৪, বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দের আয়োজনে বিজ্ঞান ভবন সংলগ্ন মাঠে সীরাত সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করা হয় এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে হামদ ও নাতে রাসুল পরিবেশিত হয়।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদ্দীন এর সভাপতিত্বে সীরাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের আহবায়ক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
সীরাত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ শেখ গিয়াস উদ্দিন এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোঃ রইছ উদ্দীন বলেন, “মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের কামনা ছিল এদেশের তরুণরা নবীর আদর্শে লালিত হবে কিন্তু একারণে অতীতে তাদেরকে জঙ্গী হিসেবে আখ্যা দেয়া হতো। পাশাপাশি ইসলামিক কার্যকলাপে আমাদের দেশের মুসলিম তরুণরা ধারাবাহিকভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছিল। এধরনের সীরাত সম্মেলনের মাধ্যমে ইসলাম সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। রাসূল (স.) এর সীরাতের দিকগুলো আমাদের জীবনে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করবো তাহলেই আমরা প্রকৃত মুসলমান হতে পারবো। আর মুসলমান হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেনো কারো দ্বারা কোনো প্রকার জুলুম ও অবিচার সংঘটিত না হয়।”
প্রধান অতিথি হিসেবে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “বর্তমানে গোটা পৃথিবীতে যে অস্থিরতা বিরাজমান করছে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মুহাম্মদ (স.) এর জীবন দর্শনের বিকল্প নেই। মুহাম্মদ (স.) কে যতবেশি পাঠ করা যাবে ততবেশি আমাদের জীবন আলোকিত হবে, স্বার্থক হবে, ততবেশি একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে পারবো। মুহাম্মদ (স.) পৃথিবীতে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে এসে সে সময়কার মক্কার সবচেয়ে বর্বর জাতিকে, সে সমাজকে সবচেয়ে সুন্দর জাতি ও সমাজে পরিণত করেছেন। একটি রাষ্ট্রকে আমুল সংস্কার করতে গিয়ে অনেক সময় ব্যয় করতে হয় অথচ মুহাম্মদ (স.) শত সহস্র বাধা পেরিয়ে তিনি তাঁর মিশনে সর্বোচ্চ সফল হয়েছেন। অন্তঃত কৌতুহলী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হলেও মুসলমানদেরতো বটে অন্য ধর্মাবলম্বিদেরও রাসূলের সীরাত একবার হলেও পাঠ করা উচিত।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, “আজকের সীরাত সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য স্বার্থক হবে যদি আমরা রাসূল (স.) এর জীবন আদর্শ অনুযায়ী আমাদের নিজেদের জীবন দর্শন পরিচালিত করতে পারি।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “পৃথিবীতে সবকিছুরই সমাধান রয়েছে রাসূল (স.) এর সীরাতে। রাসূল (স.)- কে প্রশ্নহীন অনুসরণ করতে হবে। আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যদি রাসূল (স.) এর সীরাত অনুযায়ী চলতে পারি তাহলেই আমরা সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে থাকতে পারবো।”
সম্মেলনের দ্বিতীয় অংশে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান।
এছাড়াও রাসূল (স.) এর প্রতি ভালোবাসা ও তাঁর আদর্শিক জীবন চরিত্র নিয়ে দিক নির্দেশনামূলক আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা মনজুর, ড্যাফোডিল ইসলামিক সেন্টারের পরিচালক শায়খ প্রফেসর মোখতার আহমাদ, মিরপুরের মাসজিদুল জুম’আ কমপ্লেক্সের খতিব শায়খ আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বাহাদুর শাহ জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোঃ আমানুল হক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ ছালাহ্ উদ্দীন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সীরাত সম্মেলন ২০২৪ এর আহবায়ক হিসেবে ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ছালেহ উদ্দীন।
সীরাত সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।